বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৭ অপরাহ্ন

ডানিয়েল প্রুড ‘হত্যাকাণ্ড’ : নিউইয়র্কের সাত পুলিশ বরখাস্ত

ডানিয়েল প্রুড ‘হত্যাকাণ্ড’ : নিউইয়র্কের সাত পুলিশ বরখাস্ত

স্বদেশ ডেস্ক:

ড্যানিয়েল প্রুড নামের এক কৃষাঙ্গকে হত্যার অভিযোগে সাত পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তের এ ঘোষণা দেন রচস্টারের মেয়র লাভলি ওয়ারেন। গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তিনি।

বরখাস্তের ঘোষণায় মেয়র লাভলি ওয়ারেন বলেন, ‘সমাজের ভেতর শেকড় গেড়ে বসা বর্ণবিদ্বেষের কারণেই এ মৃত্যু হয়েছে। আমি আজ কাউন্সিলরদের মতামতের বিপক্ষে গিয়েই প্রশ্নবিদ্ধ কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করছি। একই সঙ্গে আমি অ্যাটর্নি জেনারেলকে এ বিষয় তদন্ত শেষ করার আহ্বান জানাচ্ছি।  ডানিয়েল প্রুড আমাদের পুলিশ বিভাগ, আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা এবং আমাদের সমাজ দ্বারা উপেক্ষিত হয়েছেন। এমনকি আমার দ্বারাও তিনি উপেক্ষিত হয়েছে। আমরা তাকে ব্যর্থ করে দিয়েছি।’

গত মার্চে পুলিশি হেফাজতে মারা যান প্রুড। গ্রেপ্তার করার সময় পুলিশ তাকে ‘স্পিট হুড’ পরিয়ে রাস্তায় মুখ চেপে ধরলে শ্বাসরোধ হয়ে প্রুড মারা যান। এ ঘটনাটি ঘটে পুলিশি নির্যাতনে কৃষাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড নিহতের পর বর্ণবাদবিরোধী ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনেরও আগে।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি জানায়, এতদিন চুপচাপ থাকলেও গত বুধবার প্রুডের পরিবারের সদস্যরা এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রুডকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ আনে।

প্রুডে মার্চে মারা গেলেও মাত্র গত মাসের শুরুতে তিনি বিষয়টি জানতে পারেন জানিয়ে মেয়র লাভলি আরও বলেন, ‘নগরীর পুলিশ প্রধান সময়মত আমাকে প্রুডের মৃত্যুর বিষয়ে জানাতে ব্যর্থ হয়েছেন। প্রুডের মৃত্যু প্রমাণ করে দিয়েছে, আমাদেরকে অতীতেও অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে। আজও আমাদেরকে সেই একই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে।’

গত মার্চে নিউইয়র্ক পুলিশের হাতে নিহত হওয়া প্রুডের হত্যার দৃশ্য গত বুধবার প্রকাশ্যে আসে। ড্যানিয়েলকে কীভাবে আটক করা হয়েছিল এবং তাকে কীভাবে হত্যা করা হয়-তা ওই ভিডিওটিতে উঠে আসে। যেদিনকার ঘটনা, সেদিন বিকেলের দিকে ড্যানিয়েল প্রুডে বিবস্ত্র অবস্থায় রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছিলেন। ড্যানিয়েল প্রুডে ওইদিন তার ভাই জোয়ে প্রুডের বাড়ির পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়েছিলেন। হাসপাতালে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্টেও দেখা যাচ্ছে তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।

ভিডিওতে দেখা যায়, প্রুডে নিজের ভাইকে বাঁচানোর জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথোপকথন চালিয়ে যাচ্ছেন। অথচ পুলিশের পাঁচজন সদস্য তার ভাই ড্যানিয়েল প্রুডে হাতকড়া পরিয়ে ঘিরে রেখেছে। ড্যানিয়েল একপর্যায়ে চিৎকার করে নিজেকে করোনা আক্রান্ত দাবি করে পুলিশের গায়ে থুথু দিতে শুরু করেন। এরপর একজন কর্মকর্তা তার মুখে মুখোশ পরিয়ে দেয়। তারপর মাটিতে ফেলে ঘাড়ে হাঁটু চেপে ধরে।

এ সময় ড্যানিয়েল প্রুডে পুলিশকে বলেন, ‘আপনি আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করছেন।’

পুলিশ কর্মকর্তা মার্ক ভগন, ট্রয় টালাডে মিলে তাকে চেপে ধরে রাখেন। এরপর অ্যাম্বুলেন্সে করে ড্যানিয়েলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ‘ব্রেন ডেড’ হিসেবে রিপোর্ট আসে। এর সাতদিন পর ড্যানিয়েল মারা যান।

ড্যানিয়েল প্রুডের ভাই জোয়ে প্রুড দাবি করেন, ‘পুলিশ ঠান্ডা মাথায় আমার ভাইকে হত্যা করেছে। আমার ভাইকে নিকৃষ্ট প্রাণী হিসেবে গণ্য করেছে পুলিশ।’

তিনি বলেন, ‘এসব বন্ধ হওয়াটা যে খুবই দরকার, সেটা বোঝার আগে আরও কতো ভাই মারা যাবে, কে জানে! আমি আমার ভাইকে সাহায্যের জন্য ফোন কল করেছিলাম, তাকে শেষ করে দেওয়ার জন্য নয়।’

নিউইয়র্কের রচেস্টারের মেয়র ভিডিওটি দেখে পুলিশের ওপর বিরক্ত হয়ে বলেন, ‘আমি কেবল তার পরিবারকে সহানুভূতি এবং সমানুভূতি জানাতে পারি।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877